Pandav Prosthaner Pothe by Ashis Kumar Chatterjee

Pandav Prosthaner Pothe
by Ashis Kumar Chatterjee
Travelogue, Bengali
Hardbound, 256 Pages, 300 gms
About: pandav, prasthan, asis, chatterjee, bengali, travelogue
Releasing in February 2021
আশিস কুমার চট্টোপাধ্যায়
"পাণ্ডব প্রস্থানের পথে "
নামটি শুনলে পাঠকের মনে যে প্রথম প্রশ্নটি ভেসে আসে, তা হল "মহাপ্রস্থানের পথে" নয় কেন? এর উত্তরে বলতে হয়, "আজ্ঞে, যে কারনে প্রশ্নটা করলেন, ঠিক সে কারনেই নয়।" পাণ্ডবরা মহাপ্রস্থানে গিয়েছিলেন সবারই জানা, তাই পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানের পথ নিয়ে লেখা বইয়ের নাম "মহাপ্রস্থানের পথে" হলেই ভালো হত বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে। কিন্তু সত্যিই ভালো হত কি? ঐ নামে তো একটি অতি বিখ্যাত বই আছে -- প্রবোধ কুমার সান্ন্যালের কেদারনাথ যাত্রা নিয়ে লেখা কালজয়ী ভ্রমণকাহিনী। তাই ঐ একই নামে কি আরেকটি বইয়ের নাম দেওয়া যায়? সে জন্যই মাথা খাটিয়ে বার করতে হল একটি নতুন নাম, যা বইয়ের কনটেন্টকেও বোঝাবে, আবার পাঠকের ঔৎসুক্যটাও বাড়িয়ে তুলবে।
পাণ্ডবরা যে স্বর্গের পথে হিমালয়ে গিয়েছিলেন, এ গল্প মহাভারতের কল্যাণে আমাদের জানা। কিন্তু যা জানা নেই, তা হল ঠিক কোন পথে পাণ্ডবরা মহাপ্রস্থানে গিয়েছিলেন। মহর্ষি ব্যাসদেব কিন্তু মহাভারতে পরিষ্কার করে বলে যাননি ঠিক কোন পথে পাণ্ডবরা স্বর্গের দিকে এগিয়েছিলেন। সেজন্য আমরা দেখি যে দু'টি আলাদা পথ পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানের পথ হওয়ার দাবিদার। এর মধ্যে একটি পথ হচ্ছে হর-কি-দুন হয়ে স্বর্গারোহিণী পিকের দিকে, আরেকটি হচ্ছে বদরীনাথ-মানাগ্রাম পেরিয়ে লক্ষ্মীবন-সহস্রধারা-চক্রতীর্থ-সতোপন্থ তাল হয়ে চৌখাম্বা পিকের স্বর্গারোহিণী স্টেপসের দিকে। দু'টি পথেরই নিজের স্বপক্ষে যুক্তি আছে, যদিও বদরীনাথ-মানাগ্রাম হয়ে যে পথটি সতোপন্থ তালের দিকে গেছে, তার পক্ষের যুক্তিগুলো অনেক জোরদার।
আমি পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানের পথের খোঁজে ২০১৮ সালের অক্টোবরে হর-কি-দুন ট্রেকিংয়ে গিয়ে সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে "স্বর্গারোহণের সন্ধানে" নামে একটি বই লিখেছিলাম, যা হিমালয়প্রেমী মহলে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমি সতোপন্থ তালের পথে দুর্গম পাহাড়ি পথে ট্রেকিং করে সতোপন্থ তাল পৌঁছাই। সাধারণ ট্রেকারদের সীমা ঐ পর্যন্ত, সতোপন্থ তাল পেরিয়ে চৌখাম্বার স্বর্গারোহিণী স্টেপস পর্যন্ত যেতে হলে মাউন্টেনিয়ারিং ট্রেনিং লাগে, যা আমার নেই। মূলত: এই ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়েই লেখা "পাণ্ডবপ্রস্থানের পথে" বইটি, তার সঙ্গে আছে আমার যা "ইউ-এস-পি", অর্থাৎ শুধুমাত্র পথের বর্ণনাই নয়, তার সঙ্গে ঐ পথের ইতিহাস-ভূগোল-ভূতত্ত্ব-জলতত্ত্ব বা হাইড্রোলজি-নৃতত্ত্ব ইত্যাদি ছাড়াও শাস্ত্রালোচনা। বইটিতে কী ধরণের আলোচনা আছে সেই ব্যাপারে দু'টি হিন্ট দিচ্ছি। এক, ৭৯ ডিগ্রী ইস্ট লঙ্গিচ্যুড এবং তার রহস্য। আর দুই, পাণ্ডবদের স্বর্গলাভের রহস্য (ব্যাসদেবেরই লেখা শ্রীমদভাগবতে কিন্তু পাণ্ডবদের স্বর্গগমন নিয়ে সম্পূর্ণ অন্য ভাষ্য আছে)।
এই কষ্টকর দুর্গম রাস্তায় একা যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমি এই ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলাম অন্য ট্রেকিংগুলির মতোই কলকাতার অ্যাডভেঞ্চারার্স ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে। আমার ট্রেকিংয়ের বইগুলির পাঠকদের কাছে রঞ্জু, পদ্ম, তৃষা ইত্যাদি নামগুলি অচেনা নয়। সতোপন্থ তাল ট্রেকিংয়েও আমি এদের সঙ্গী ছিলাম, এবং একজন চৌষট্টি বছরের বৃদ্ধকে নিয়ে এই বিপদ শঙ্কুল পথে যাওয়ার জন্য এদের সবার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। এরা সাহায্য না করলে আমার পাণ্ডবদের স্বর্গারোহণের পথের খোঁজ করা সম্ভব হত না।
স্মৃতি পাবলিশার্স-য়ের কর্ণধার শ্রীমতি স্মৃতি বসুর কাছে আমার ঋণের শেষ নেই। ওনার সহযোগিতা ছাড়া এই বইটি প্রকাশিত হত না।
আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডা: অনিরুদ্ধ বসু বইটির টেকনিক্যাল ব্যাপারে সাহায্য করেছে, তার কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।
নিজের দেশের মহাকাব্যকে জানা মানে নিজের দেশকে জানা। এই বইটির মাধ্যমে সেই চেষ্টাই করলাম। জানি না কতটা পারলাম। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আশা করি পাঠকরা আমার অন্য ট্রেকিংয়ের বইগুলির মতো এই বইটিকেও গ্রহণ করবেন।
আশিস কুমার চট্টোপাধ্যায়
দুর্গাপুর
Publications of Ashis Kumar Chatterjee:
Comments